এলাচের গুনাগুণ || Benefits of Cardamon
এলাচের গুনাগুণ || Benefits of Cardamon
এলাচ (Cardamon) মসলা জাতীয় ফসল যার ব্যবহার মিষ্টি বা ঝাল সব রকম খাবারেই দেখা যায়। এলাচের বৈঙানিক নাম Elettaria cardamomum ( এলেটারিয়া কার্ডামোমাম ) এবং ইংরেজিতে বলা হয় Cardamon (কার্ডামন)। এটি মূলত আদা জাতীয় গাছ এবং গাছের পাতাগুলো একটু বেশি লম্বা ও চওড়া। এই গাছের গোড়ার দিক থেকে লম্বা ফুলের স্টিক বের হয়। এই ফুলের ফলই হচ্ছে এলাচ।
এতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, কোলেস্টেরল, ক্যালোরি, চর্বি, ফাইবার, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন, পাইরিডক্সিন, থায়ামিন, ইলেক্ট্রোলাইটস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস রয়েছে।
এলাচের উপকারিতা ও গুনাগুণ:
1. হৃদ রোগের জন্য:
এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের জন্য ভালো। কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের জন্যও এলাচ একটি দারুণ ওষুধ।
2. শ্বাসকষ্ট:
এলাচ বিভিন্ন সমস্যা যেমন সর্দি, কাশি, ফুসফুসের সমস্যা এবং রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা দূর করে। ব্রঙ্কাইটিস বা শ্বাসকষ্টের কোনো সমস্যা থাকলে এলাচ খাওয়া ভালো।
3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় এলাচ খুবই উপকারী। এটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। স্যুপ বা স্টুতে এলাচ মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যে রক্তচাপ খুব সহজেই কমতে শুরু করে।
4. বিষণ্নতায়:
বিষণ্ণতার মতো মানসিক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে এলাচ। প্রতিদিন চায়ে কয়েক দানা এলাচ সিদ্ধ করে খাওয়া ভালো।
5. হজমের কাজে এলাচ:
এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা শরীরকে বিপাকীয় ব্যাধি থেকে মুক্তি দেয়। লিভার এবং অগ্ন্যাশয় উন্নত করে। ফলে হজম ভালো হয়, ফলে বুক জ্বালাপোড়া বা পেট ফাঁপা এবং বুক জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।
6. ডিটক্সিফিকেশনে এলাচ:
যত বেশি ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করবে, ভিতরে তত পরিষ্কার এবং সতেজ হবে। এলাচ বাইরে থেকে আসা যেকোনো টক্সিন থেকে শরীরকে নির্গত করে এবং ডিটক্সিফাই করে।
7. হেঁচকি থেকে মুক্তি
শরীরের যেকোনো পেশিকে শান্ত করতে এলাচের রয়েছে অনেক উপকারিতা। তাই কোনো কারণে হেঁচকি উঠলে এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ এলাচ মিশিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর সেটি আস্তে আস্তে পান করুন।
8. ক্ষুধা বৃদ্ধি:
এলাচ ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। এলাচ তেল ব্যবহারে খাওয়ার ইচ্ছা বাড়ে এবং ক্ষুধাও বাড়ে।
9. দাঁত ও মুখের জন্য এলাচ:
এলাচের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণাবলী মুখের ভেতরের অংশ অর্থাৎ মাড়ি ও দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। এলাচের তিক্ত স্বাদ নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে এবং সতেজতা আনে।
10. ক্যান্সারে এলাচ:
এলাচের পুষ্টিগুণের কারণে অনেক ধরনের ক্যান্সারের টিউমার বা কোষ জন্মাতে পারে না। কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে এলাচ বিশেষভাবে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
11. স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে:
এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে শান্ত করতে এবং স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুধের সাথে সেদ্ধ এলাচ পান করুন। আপনি অবশ্যই ফলাফল পাবেন।
--------------------------------
আরও দেখুন
----------------------------------
12. যৌন স্বাস্থ্য:
এলাচের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের কারণে এটি স্নায়ুকে শান্ত করে এবং যৌন ইচ্ছা বাড়ায়। এছাড়াও এলাচ বন্ধ্যাত্ব দূর করতেও সাহায্য করে।
13. উজ্জ্বল ত্বকে এলাচ:
এলাচ ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে দারুণ কাজ করে। ব্রণ ও ত্বকের কালচে ভাব দূর করে। মধু ও এলাচের প্যাক তৈরি করে মুখে লাগালে ফল পেতে পারেন।
14. ত্বকের এলার্জিতে এলাচ:
এলাচ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানে ভরপুর। এটি একটি খুব ভাল অ্যান্টিসেপটিক এবং প্রদাহরোধী। ফলে এটি ত্বককে নরম করে এবং ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তাই এলাচ ত্বকের জন্যও একটি ওষুধ। অ্যালার্জিযুক্ত অংশে মধু ও কালো এলাচের মিশ্রণ লাগালে খুব দ্রুত ফল পাওয়া যাবে।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোন ভেষজ ঔষধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments