দারুচিনি খাওয়ার সেরা ৯টি উপকারিতা | গাছ-গাছড়ার চিকিৎসা
দারুচিনি আমরা অনেকেই চিনি, অনেকেই চিনি না। তবে অনেকেই যে চিনি না তা কিন্তু ঠিক নয়। কারণ অনেকে একে ‘ডালচিনি' বলে। তাই অনেকের কাছে পরিচিতি ডালচিনি বা দারচিনিই হলো এই দারুচিনি। এটি আমাদের রান্নার একটি মসলা। এর খ্যাতি গরম মসলা হিসেবে।
কণ্ঠস্বর বিকৃতি: আপনার যদি কফের কারণে বায়ু আটকে যায়, স্বর বদলে যায়, সেক্ষেত্রে দারচিনি খুব ফল দেবে। এজন্য ১ গ্রাম দারুচিনি গুঁড়া আধা কাপ গরম
পানিতে রাতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সেটাকে ছেকে নিয়ে পানিটা খাবেন। এটা গলার স্বরকে স্বাভাবিক করে দেবে।
গলার ক্ষত: আপনি হয়ত পিত্ত ও শ্লেস্মার কারণে অনেকদিন ধরে ভুগছেন। অল্প কিছু খেলেই গলাটা জ্বালা ও মাঝে মাঝে ব্যথা করে। সুরটা দেবে যায়। এগুলো গলার ক্ষতের প্রাথমিক লক্ষণ। এক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে একটি সাধারণ চিকিৎসা করে দেখতে পারেন। ১ গ্রাম দারুচিনি গুঁড়া, এক কাপ গরম পানিতে রাতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সেটাকে ছেকে সকালে ও বিকালে দু'বেলা অল্প অল্প করে খান। এতে গলার ক্ষত ভালো হয়ে যাবে।
মাথার যন্ত্রণা: পিত্ত ও শ্লেষ্মার জন্য মাথায় যন্ত্রণা হতে পারে। জ্বর হলে কিংবা জ্বরের আগে এ যন্ত্রণা হতে পারে। এ অবস্থায় আপনি দারুচিনি গুঁড়া সিকি গ্রাম পরিমাণ সকালে ও বিকালে দু'বার খান। আবার এই দারুচিনি মিহি গুড়া করে ২/১ বার নাকে দিয়ে শ্বাস নিন। এতে নাসাপথ পরিষ্কার হবে। নাকের পানি পড়া ও মাথার যন্ত্রণাও কমবে।
মুখের মেছতা: কোনো কোনো ছেলে বা মেয়ের বিশেষ করে মেয়েদের মুখে কালো রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। এ রকম হলে প্রথমে দারুচিনি গুঁড়া এক বা দেড় গ্রাম আগের দিন রাতে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সেটাকে ছেকে নিয়ে সকালে ও বিকালে দু'বার পানিটা খান। আবার ৩/৪ গ্রাম দারুচিনি থেঁতো করে দু'কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ মতো হলে ঐ পানিটা সকালে ও বিকালে দু'বারে খান। আর দুই এক চিমটি পরিমাণ দারুচিনির মিহি গুড়া একটু দুধের সরের সাথে মিশিয়ে ঐ মেছতার ওপরটায় আস্তে আস্তে ঘষে দিন। এতে করে ঐ মেছতার দাগটা মিলিয়ে যাবে।
দাদ ও একজিমা: দাদ ও একজিমার সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালো ও সাদা রঙের চাকা হয়। খুব বেশি চুলকায় এই চাকা চাকা জায়গাগুলো। এর ফলে ঐ জায়গাটা একটু ফুলে লাল হয়ে ওঠে। অনেক সময় পানি বের হয়। এক্ষেত্রে দারুচিনি ৩ গ্রাম পরিমাণ নিয়ে তাকে থেঁতো করে দু'কাপ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সকালে ও রাতে খাবার পর আধা কাপ করে দু'বার খেতে হবে। আর এর সাথে ২/৩ গ্রাম দারুচিনি বেটে অল্প একটু দুধের সরের সাথে মিশিয়ে তা ঐ চাকা চাকা জায়গায় একদিন পর পর লাগাতে হবে। এতে করে ঐ দাদ বা একজিমাটা মিশে যাবে।
অর্শ ও ভগন্দর রোগ: অর্শ ও ভগন্দর রোগে আজকাল কষ্ট পাচ্ছেন অনেকেই। মনে করা হয়, লিভারের দোষে অর্শ ও ভগন্দর রোগ হয়। এগুলোকে চর্ম রোগও বলা যায়। এক্ষেত্রে দারুচিনি খেলে এ দু'টি রোগের উপশম হবে। দারুচিনি গুঁড়া সিকি গ্রাম পরিমাণ সকালে ও বিকালে ও দু'বার একটু মাখনের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। ১৫ দিন ধরে এটি খেলে সমস্যা চলে যাবে।
রজঃরোধ ও কৃমি: নারীদের মাসিক (ঋতুস্রাব) বন্ধ হয়ে যাওয়া হলো রজ:রোধ। এই রজ:রোধ হলে পাণ্ডুরোগ দেখা দেয়। তার সাথে পেটে বায়ুও হতে পারে। এ রোগের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে ৩/৪ গ্রাম দারুচিনি নিয়ে থেঁতো করে ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। এক কাপ থাকতে নামিয়ে হেঁকে সকাল বিকাল ২ বেলা খেতে হবে। ৫ দিন খেলে মাসিক ঋতুস্রাবটা অল্পদিনের মধ্যেই হয়ে যায়। এছাড়াও কৃমির উৎপাতে যারা কষ্ট পাচ্ছেন তারাও দারুচিনি গুঁড়া সিকি গ্রাম পানিসহ ৫ দিন সকালে এবং বিকালে খেলে কৃমি থেকে রেহাই পাবেন।
ক্ষুধামন্দা: অনেক সময় আমাদের ভালো ক্ষিধে পায় না। আর খেলেও ভালো হজম হয় না। পেটে বায়ু হয়। খাবারের পর দারুচিনি গুঁড়া সিকি গ্রাম গরম পানিসহ খেলে ঐ অসুবিধা চলে যায়।
দাঁতের ব্যথা: দাঁতের ব্যথা সারাতে দারুচিনি খুব উপকারী। ৩/৪ গ্রাম দারুচিনির গুঁড়া আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে সেই পানি মুখে দিয়ে ৫/৭ মিনিট রাখলে দাঁতের যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র: লতাপাতার ঔষধি গুণ
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোন ভেষজ ঔষধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
--------------------------------
আরও দেখুন
লজ্জাবতী গাছের বিস্ময়কর কয়েকটি উপকারিতা
----------------------------------
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Thanks 👍
ReplyDelete