গাজরের অসাধারণ ৮টি স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ
গাজরের অসাধারণ ৮টি স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ
গাজর একটি চমৎকার পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A, C, D, E, K, B1 এবং B6, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জৈব সোডিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শীতের বাজারে অনেক ধরনের পুষ্টিকর সবজি দেখা যায়। তার মধ্যে গাজর অন্যতম। এই গাজর শরীরের সমস্ত শক্তির উৎস। আসুন জেনে নেই এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পর্কে যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
1. ত্বকের যত্নে গাজর:
গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “এ” রয়েছে, যা সুন্দর ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ত্বকের অবাঞ্ছিত ভাঁজ, কালচে দাগ, ব্রণ, অমসৃণ স্কিন টোন ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন এ-এর দৈনিক চাহিদা মেটাতে আপনি নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।
2. দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে:
গাজর হল বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ একটি সবজি যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। লিভারে যাওয়ার পর বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এই ভিটামিন চোখের রেটিনায় পৌঁছে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি চোখে বেগুনি রঞ্জকের সংখ্যা বাড়িয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতেও ভূমিকা রাখে। যারা রাতের অন্ধকারে ভালোভাবে দেখতে পান না তারা এই সমস্যা দূর করতে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।
3.
দেহের পুষ্টি ও বুদ্ধির বিকাশে:
গাজর খাওয়া শরীরের পুষ্টি এবং মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। অন্যান্য সবজির মতো গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের কোষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই আলু বা ভুতরার তৈরি ক্ষতিকর চিপস না খেয়ে গাজরের হালুয়া ও অন্যান্য সুস্বাদু খাবার খেতে পারেন।
4.
বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে:
শীতকালে সর্দি, সর্দি-কাশি ইত্যাদি লেগেই থাকে। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব হলে শরীর রোগাক্রান্ত হয়,শারীরিক বৃদ্ধি ও ক্ষমতা কমে যায়, খাবার হজম হতে অনেক সময় লাগে। বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। গাজরে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং লাইকোপিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই শরীরের বিভিন্ন রোগ দমনে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।
5. বিভিন্ন হৃদরোগ প্রতিরোধ:
বিভিন্ন হৃদরোগ প্রতিরোধে গাজর খুব ভালো কাজ করে। এতে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড বিভিন্ন হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। গাজর নিয়মিত সেবন ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই যাদের হৃদরোগ আছে তারা বিনা দ্বিধায় গাজর খেতে পারেন।
6. দাঁত সুন্দর ও সুস্থ রাখতে:
সুন্দর ও সুস্থ সবল দাঁতের জন্য গাজর নেই। গাজর দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া গাজরে থাকা খনিজ উপাদান দাঁত মজবুত রাখতেও সাহায্য করে।
7. লিভারের যত্নের জন্য গাজর:
গাজরে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'এ' লিভারে যায় এবং শরীর থেকে টক্সিনের মতো ক্ষতিকারক পদার্থ বের করে দিতে এবং লিভারের অতিরিক্ত চর্বি দূর করতে সাহায্য করে। এটি ফাইবার সমৃদ্ধ একটি সবজি যা কোলন পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি শরীরকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই লিভার সুস্থ রাখতে নিয়মিত গাজর খান।
8. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে:
নিয়মিত গাজর খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। গাজরে ফ্যালকারিনল এবং ফ্যালকারিনডিওল নামক রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্যকে শক্তিশালী করে। তাই নিয়মিত গাজর খান এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে দূরে থাকুন।
গাজরে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ। এর পুষ্টিগুণের পাশাপাশি এর রয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা। তাই সেসব উপকারিতা ভালোভাবে জানা দরকার। তাই শরীর সুস্থ রাখতে খাবার তালিকায় অবশ্যই গাজর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments