আদার ঔষধি গুণাবলি || আদার উপকারিতা:
আদার ঔষধি গুণাবলি || আদার উপকারিতা:
আদা আমাদের প্রাচীন ওষুধের একটি অপরিহার্য উপাদান। এর গুণমানের কারণে এটি আমাদের খাদ্যতালিকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা প্রতিদিন রান্নায় যে আদা খাই তার কিছু উপকারিতা আছে কিন্তু ঔষধি উপকারিতা পেতে হলে নিয়ম মেনে আদা খেতে হবে।
বলা হয় আদা সব রোগ নিরাময় করে। যার অর্থ আদা আমাদের শরীরের সকল রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। নির্যাসের মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই এবং সি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট। যে কারণে সব বয়সের মানুষই আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য, আদা-মধু-জল সুস্থ শরীর ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকরী।
আমাদের কোন সমস্যায় আদা নিবিড়ভাবে কাজ করে তা জানা সম্ভব
ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথায় আদার ব্যবহার:
যারা এসব সমস্যায় ভুগছেন তারা খাওয়ার পর এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা উপশম হবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন, তারা এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে একসঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে চায়ের মতো নিয়মিত পান করলে উপকার পাবেন।
হাঁপানি এবং ফুসফুসের সংক্রমণ নিরাময়ে আদা:
পালমোনারি আর্টারিতে ইনফেকশন থাকলে এবং শ্বাসকষ্ট হলে বা হাঁপানি হলে এক চা চামচ করে দিনে দুবার আদার রস, লেবুর রস, এক কাপ গরম পানিতে মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন এবং ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলুন।
পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে:
পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রতিদিনের মলত্যাগ, মলের দুর্গন্ধ ও শক্ত হয়ে যাওয়া, তাদের জন্য প্রথম সাত দিন এক চা চামচ আদার রস এক কাপ গরম পানিতে চায়ের মতো মিশিয়ে ছয় থেকে সাত বার খান। এতে কিছু সমস্যার সমাধান হবে; এরপর দিনে দুবার এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো খেতে হবে। তাহলে গ্যাসের স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাবে। মনে রাখবেন, গ্যাসের সমস্যার প্রধান কারণ শরীরের বিরুদ্ধে খাবার; আসলে, আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক খাবার এড়িয়ে চললে কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না।
অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা হলে:
মূলত এসব রোগের কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। শরীরের ওজন ঠিক রাখতে এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চায়ের মতো খেলে। যেহেতু এ রোগের অন্যতম কারণ শরীরে পানি ও ক্যালসিয়ামের অভাব, তাই পানি পানের প্রবণতা বাড়াতে হবে।
হৃদরোগে আদার ব্যবহার:
প্রাকৃতিক উপায়ে হৃদরোগের চিকিৎসার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যাদের হৃদরোগ আছে কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার খেতে হবে। গ্যাসের সমস্যা থাকলে গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস মিশিয়ে সাত দিন চায়ের মতো ছয় থেকে সাত বার পান করুন। ধৈর্য ধরে নিয়মিত এই নিয়ম মেনে চললে হৃদরোগের সমস্যা দূর হতে থাকবে।
--------------------------------
আরও দেখুন
যৌনরোগে লজ্জাবতী গাছের বিস্ময়কর উপকারিতা
----------------------------------
জ্বর জ্বর, বমি বমি ভাব হলে:
এক চা চামচ আদার রস গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো ছয় থেকে সাত বার পান করলে জ্বর ও বমিভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা ব্যথা এবং মাথাব্যথায় আদার ব্যবহার:
তাত্ক্ষণিক সমাধানের জন্য, সামান্য লবণ দিয়ে কাঁচা আদা চিবিয়ে নিন। কিন্তু রোগ সারাতে চাইলে এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার করে চায়ের মতো পান করলে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আদা কাশি কমায়, কফ দূর করে:
এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার চায়ের মতো পান করুন।
পেট এবং লিভার টনিক:
আদার গুঁড়া, মধু ও আমের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে চা হিসেবে দিনে তিনবার খেতে পারেন। এ ছাড়া দিনে দুবার এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো খেলে পাকস্থলী ও লিভারের শক্তি বাড়বে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে আদা:
এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার চায়ের মতো পান করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের মধু খাওয়া উচিত।
অনেকেই মাসে একবার আদা পিষে ফ্রিজে রেখে দেন। আদার সঙ্গে কিন্তু ওষুধি উপকারিতা পাওয়া যাবে না।
ইউএস ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ হেলথের মতে, আদা খুব বেশি আদা খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে হজমের সমস্যা এবং ফোলাভাব হতে পারে। প্রতিটি উপাদানের নিজস্ব ডোজ রয়েছে, তাই 15 গ্রাম আদার রস সারা দিন খাওয়া উচিত। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা মধু কম খাবেন।
সূত্র: ইন্টারনেট।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোন ভেষজ ঔষধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments